ইলেকট্রোস্কোপ স্থির বিদ্যুৎ পরীক্ষার জন্য খুব চমৎকার একটা যন্ত্র। যন্ত্রটা খুবই সহজ, এখানে চার্জের অস্তিত্ব বোঝার জন্য রয়েছে খুবই হালকা সোনা, অ্যালুমিনিয়াম বা অন্য কোনো ধাতুর দুটি পাত। এই পাত দুটো একটা সুপরিবাহী দণ্ড দিয়ে একটা ধাতব চাকতির সাথে লাগানো থাকে, পুরোটা একটা অপরিবাহী ছিপি দিয়ে কাচের বোতলের ভেতর রাখা হয়, যেন বাইরে থেকে দেখা যায় কিন্তু বাতাস বা অন্য কিছু যেন পাতলা ধাতব পাত দুটোকে নাড়াচাড়া করতে না পারে।
চার্জ আহিতকরণ
একটা কাচের টুকরোকে সিল্ক দিয়ে ঘষা হলে কাচ দণ্ডটাতে পজিটিভ চার্জ জমা হবে। এখন কাচ দণ্ড যদি ইলেকট্রোস্কোপের ধাতব চাকতিতে ছোঁয়ানো যায় তাহলে সাথে সাথে খানিকটা চার্জ চাকতিতে চলে যাবে। চাকতি যেহেতু ধাতব দণ্ড আর সোনার পাতের সাথে লাগানো আছে, তাই চাটুকু সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়বে। সোনার পাতে যখন একই পজিটিভ চার্জ এসে হাজির হবে আর তখন দেখা যাবে পাত দুটো বিকর্ষণ করে তাদের মাঝে একটা ফাঁক তৈরি হয়েছে।
ঠিক একইভাবে একটা চিরুনিকে যদি ফ্লানেল দিয়ে ঘষা হয় তাহলে চিরুনিটাতে নেগেটিভ চার্জ জমা হবে, এখন সেটা যদি চাকতিতে স্পর্শ করা হয় তাহলে নেগেটিভ চার্জ সোনার পাত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়বে এবং দুটো পাত একটা আরেকটাকে বিকর্ষণ করে ফাঁক হয়ে যাবে।
চার্জের প্রকৃতি বের করা
কোনো একটা বস্তুতে যদি চার্জ জমা হয় তাহলে সেটা কি পজিটিভ নাকি নেগেটিভ চার্জ সেটা ইলেকট্রোস্কোপ দিয়ে বের করা যায় । প্রথমে ইলেকট্রোস্কোপের চাকতিতে পরিচিত কোনো চার্জ
দিতে হবে। ধরা যাক কাচকে সিল্ক দিয়ে ঘষে পজিটিভ চার্জ তৈরি করে আমরা সেটাকে চাকতিতে স্পর্শ করলে যদি সোনার পাত দুটির ফাঁক কমে যায় তাহলে বুঝতে হবে এর মাঝে নেগেটিভ চার্জ। যদি ফাঁকটি আরো বেড়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে চার্জটি নিশ্চয়ই পজিটিভ।
চার্জের আবেশ
কোনো একটা বস্তুতে চার্জ আছে কি না সেটা চাকতিকে স্পর্শ না করেই বোঝা সম্ভব। ধরা যাক পজিটিভ চার্জ আছে এ রকম একটা দণ্ডকে চাকতির কাছে আনা হয়েছে, তাহলে চাকতির মাঝে নেগেটিভ চার্জের আবেশ হবে। এই নেগেটিভ চার্জের আবেশ তৈরি করার জন্য ইলেকট্রোস্কোপের অন্যান্য অংশ থেকে নেগেটিভ চার্জকে চাকতির মাঝে চলে আসতে হবে, সে কারণে সোনার পাত দুটিতেও পজিটিভ চার্জ তৈরি হবে। সেই পজিটিভ চার্জ সোনার পাত দুটোর মাঝে একটা ফাঁক তৈরি করবে।
যদি পজিটিভ চার্জ দেওয়া কোনো কিছু না এনে নেগেটিভ চার্জ দেওয়া কিছু আনি তাহলেও আমরা দেখব সোনার পাত দুটো ফাঁক হয়ে যাচ্ছে, তবে এবারে সেটি হবে সেখানে নেগেটিভ চার্জ জমা হওয়ার কারণে।
Read more